স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে গেল কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২৩ হেক্টর আমন ধানের জমি তলিয়ে গেছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক কৃষক। চলতি মৌসুমের শুরুতে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে কৃষকেরা স্বস্তিতে আমন ধানের চারা রোপণ করেছিলেন। কিন্তু গত তিনদিনের লাগাতার বৃষ্টি তাদের সেই স্বপ্ন যেন ভেঙে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলার গৌরারং, মোহনপুর ও সুরমা ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক কৃষকের রোপণ করা জমি এখন পানির নিচে। চারা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় তাদের মাথায় হাত পড়েছে। গৌরারং ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের নাজমুল হোসেন বলেন, আমি ৬ কেয়ার জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করেছিলাম। টানা বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি ঢলের ধাক্কায় অর্ধেক জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সামনে আরও বৃষ্টি হলে, আমাদের সমস্যা হবে। পানি কমে গেলে আবার ভালো ফসলের আশা করতে পারি। গৌরারং ইউনিয়নের রাধানগর এলাকার কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, তিনি সাড়ে তিন কেয়ার জমিতে বিনা-২২ জাতের ধান রোপণ করেছিলেন, যা পুরোটাই এখন পানির নিচে। যদি বৃষ্টি না কমে, তাহলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। একই গ্রামের আরেক কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, তিনি বিনা-২২, ব্রি-৮৭ ও ব্রি-১০৩ জাতের ধান রোপণ করেছিলেন, যার বেশিরভাগই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। মোহনপুর ইউনিয়নের আব্দুল হামিদ জানান, তার তিন কেয়ার জমির মধ্যে দুই কেয়ারই তলিয়ে গেছে। যদি বৃষ্টি এভাবে চলতে থাকে, তবে বাকি জমিও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সোনাপুর গ্রামের আব্দুল হাইয়ের প্রায় আড়াই কেয়ার জমি পানির নিচে চলে গেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর ১১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৩ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, সাধারণত সুনামগঞ্জ হাওর অধ্যুষিত অঞ্চলে এবার বৃষ্টি কম হয়েছে। তবে গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলায় এ বছর ১১ হাজার ৯শত ১০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে ২৩ হেক্টর জমি নিমজ্জিত হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, যেহেতু বুধবার আবহাওয়া রৌদ্রোজ্জ্বল ছিল, বৃষ্টি না হলে পানি দ্রুত নেমে যাবে এবং ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে যদি ক্ষতি হয়, তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha